SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

পদার্থবিজ্ঞান (পুরোনো সংস্করণ) - জীবন বাঁচাতে পদার্থবিজ্ঞান(Physics to Save Lives) - এক্স-রে(X-Ray)

1885 সালে উইলহেলোম রন্টজেন উচ্চশক্তিসম্পন্ন একধরনের রশ্মি আবিষ্কার করেন, যেটি শরীরের মাংসপেশি ভেদ করে গিয়ে ফটোগ্রাফিক প্লেটে ছবি তুলতে পারত। এই রশ্মির প্রকৃতি তখন জানা ছিল না বলে তার নাম দেওয়া হয়েছিল এক্স-রে। এখন আমরা জানি এক্স-রে হচ্ছে আলোর মতোই বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ, তবে তার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য আমাদের পরিচিত দৃশ্যমান আলো থেকে কয়েক হাজার গুণ ছোট, তাই তার শরিও সাধারণ আলো থেকে কয়েক হাজার গুণ বেশি। যেহেতু তরঙ্গ দৈর্ঘ্য অনেক ছোট ভাই আমরা খালি চোখে এক্স-রে দেখতে পাই না। 

এক্স-রেতে একটি কাচের গোলকের দুই পাশে দুটি ইলেকট্রোড থাকে—একটি ক্যাথোড অন্যটি অ্যানোড। টাংস্টেনের তৈরি ক্যাথোডের ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ করে সেটি উত্তপ্ত করা হয়। তাপের কারণে ফিলামেন্ট থেকে ইলেকট্রন মুক্ত হয় এবং অ্যানোডের ধনাত্মক ভোল্টেজের কারণে সেটি তার দিকে ছুটে যায়। ক্যাথোড এবং অ্যানোডের ভেতর ভোল্টেজ যত বেশি হবে ইলেকট্রন তত বেশি গতিশক্তিতে অ্যানোডের দিকে ছুটে যাবে। এক্স-রে টিউবে এই ভোল্টেজ 100 হাজার ভোল্টের কাছাকাছি হতে পারে। ক্যাথোড থেকে প্রচন্ড শক্তিতে ছুটে আসা ইলেকট্রনগুলো অ্যানোডকে আঘাত করে। এই শক্তিশালী ইলেকট্রনের আঘাতে অ্যানোডের পরমাণুর ভেতর দিকের কক্ষপথে ইলেকট্রন কক্ষপথচ্যুত হয়। তখন বাইরের দিকে কক্ষপথের কোনো একটি ইলেকট্রন সেই জায়গাটা পূরণ করে। এর কারণে যে শক্তিটুকু উদ্বৃত্ত হয়ে যায় সেটি শক্তিশালী এক্স-রে হিসেবে বের হয়ে আসে। ঠিক কত তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের এক্স-রে বের হবে সেটি নির্ভর করে অ্যানোড হিসেবে কোন ধাতু ব্যবহার করা হচ্ছে তার ওপর। সাধারণত ভাষাকে অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়।এক্স-রে অনেকভাবে ব্যবহার করা যায়, নিচে তার কয়েকটি ব্যবহারের তালিকা দেওয়া হলো।  

(a) স্থানচ্যুত হাড়, হাড়ে ফাটল, ভেঙে যাওয়া হাড় ইত্যাদি খুব সহজে শনায় করা যায়। 

(b) দাঁতের ক্যাভিটি এবং অন্যান্য ক্ষয় বের করার জন্য এক্স-রে ব্যবহার করা হয়।

(c) পেটের এক্স-রে করে অস্ত্রের প্রতিবন্ধকতা ( Intestinal Obstruction) শনাক্ত করা যায়।

(d) এক্স-রে দিয়ে পিত্তথলি ও কিডনিতে পাথরের অস্তিত্ব বের করা যায় । 

(e) বুকের এক্স-রে করে ফুসফুসের রোগ যেমন যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, ফুসফুসের ক্যান্সার নির্ণয় করা

যায়। 

(f) এক্স-রে ক্যান্সার কোষকে মেরে ফেলতে পারে, তাই এটি রেডিওথেরাপিতে চিকিৎসার জন্য 

ব্যবহার করা হয়। 

এক্স-রের অপ্রয়োজনীয় বিকিরণ যেন শরীরে কোনো ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। এজন্যে কোনো রোগীর এক্স-রে নেওয়ার সময় এক্স-রে করা অংশটুকু ছাড়া বাকি শরীর সিসার তৈরি অ্যাপ্রোন দিয়ে ঢেকে নিতে হয়। অত্যন্ত প্রয়োজন না হলে গর্ভবতী মেয়েদের পেট বা তলপেটের অংশটুকু এক্স-রে করা হয় না। 

Content added || updated By

Promotion

Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.